কোষ বিভাজন কি ? কোষ বিভাজনের প্রকারভেদ

প্রতিটি জীবের দেহ কোষ দিয়ে গঠিত। এককোষী জীবগুলো কোষ বিভাজনের দ্বারা একটি থেকে দুটি, দুটি থেকে চারটি কোষে বিভক্ত হয় এবং এভাবে বংশবৃদ্ধি করে। বহুকোষী জীবের দেহকোষের সংখ্যা বৃদ্ধি হয়ে জীবদেহের সামগ্রিক বৃদ্ধি ঘটে। ডিম্বাণু নিষিক্ত হওয়ার পর বহুকোষী জীবের জীবন শুরু হয় একটি মাত্র কোষ থেকে। নিষিক্ত ডিম্বাণু অর্থাৎ এককোষী জাইগোট ক্রমাগত বিভাজিত হয়ে সৃষ্টি করে লক্ষ লক্ষ কোষ দিয়ে গঠিত বিশাল দেহ। অর্থাৎ যে প্রক্রিয়ায় জীবগুলো কোষের বিভক্তির মাধ্যমে একটি থেকে দুটি, দুটি থেকে চারটি কোষের সৃষ্টি হয় তাকে কোষ বিভাজন বলে । ১৮৮২ সালে Tritiurus macullosa (সামুদ্রিক সালামান্ডায়)-তে প্রথমবারের মতো কোষ বিভাজন প্রত্যক্ষ করেন - ওয়াল্টার ফ্লেমিং ( W. Flemming ) ।

কোষ বিভাজনের প্রকারভেদ

জীবদেহে তিন ধরনের কোষ বিভাজন দেখা যায়, যথা- (১) অ্যামাইটোসিস (২) মাইটোসিস এবং (৩) মিয়োসিস।

অ্যামাইটোসিস

অ্যামাইটোসিস: এ ধরনের কোষ বিভাজন ব্যাকটেরিয়া, ইস্ট, ছত্রাক, অ্যামিবা ইত্যাদি এককোষী জীবে হয়। এককোষী জীবগুলো অ্যামাইটোসিস প্রক্রিয়ায় বিভক্ত হয়ে বংশবৃদ্ধি করে। এ ধরনের কোষ বিভাজনে নিউক্লিয়াসটি ডাম্বেলের আকার ধারণ করে এবং প্রায় মাঝ বরাবর সংকুচিত হয় ও পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে দুটি অপত্য নিউক্লিয়াসে পরিণত হয়। একই সময়ে সাইটোপ্লাজমও মাঝ বরাবর সংকুচিত হয়ে দুটি কোষে পরিণত হয়। এ ধরনের বিভাজনে মাতৃকোষের নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম সরাসরি বিভক্ত হয়ে দুটি অপত্য কোষ সৃষ্টি করে তাই একে প্রত্যক্ষ কোষ বিভাজন বলে। অ্যামাইটোসিসের অন্য নাম দ্বিবিভাজন।
অ্যামাইটোসিসের বৈশিষ্ট্য:

  • নিউক্লিয়াসটির নিউক্লিয় সামগ্রী প্রথমে সরাসরি দুইটি অংশে বিভক্ত হয় এবং কোষটিও মধ্যভাগ বরাবর দুইভাগে বিভক্ত হয়।
  • একটি কোষ হতে দুটি কোষের সৃষ্টি হয়।
  • প্রোক্যারিওটিক কোষ যেমনঃ ব্যাকটেরিয়া, ইস্টে এ বিভাজন দেখা যায়।
 অ্যামাইটোসিস

মাইটোসিস

মাইটোসিস : উন্নত শ্রেণির প্রাণীর ও উদ্ভিদের দেহকোষ মাইটোসিস প্রক্রিয়ায় বিভাজিত হয়। এ প্রক্রিয়ায় মাতৃকোষের নিউক্লিয়াস একবার বিভাজিত হয়ে সমআকৃতির, সমপুর্ণ সম্পন্ন ও সমসংখ্যক ক্রোমোজোম বিশিষ্ট দুটি অপত্য কোষ সৃষ্টি করে। মাইটোসিস কোষ বিভাজনের ফলে প্রাণী এবং উদ্ভিদ দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে বৃদ্ধি পায়। এ ধরনের বিভাজনের দ্বারা উদ্ভিদের ভাজক টিস্যুর কোষের সংখ্যার বৃদ্ধি ঘটে।
মাইটোসিসের বৈশিষ্ট্যসমূহ :

  • মাইটোসিস কোষ বিভাজন দেহকোষের এক ধরনের বিভাজন পদ্ধতি ।
  • এ প্রক্রিয়ায় মাতৃকোষের নিউক্লিয়াসটি একবার মাত্র বিভাজিত হয়।
  • মাতৃকোষটি বিভাজিত হয়ে সম্পুর্ণ সম্পন্ন দুটি অপত্য কোষ সৃষ্টি করে।
  • এ ধরনের বিভাজনে মাতৃকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যা এবং অপত্য কোষের ক্রোমোজোম সংখ্যা সমান থাকে অর্থাৎ ক্রোমোজোম সংখ্যা অপরিবর্তিত থাকে।
  • এ ধরনের বিভাজনে প্রতিটি ক্রোমোজোম লম্বালম্বিভাবে দুভাগে বিভক্ত হয়। ফলে সৃষ্ট নতুন কোষ দুটিতে ক্রোমোজোম সংখ্যা মাতৃকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যার সমান থাকে। তাই মাইটোসিসকে ইকুয়েশনাল বা সমীকরণিক বিভাজনও বলা হয়।
  • কোষের নিউক্লিয়াসের বিভাজনকে বলে - ক্যারিওকাইনেসিস।
  • কোষের সাইটোপ্লাজমের বিভাজনকে বলে - সাইটোকাইনেসিস ।
  • কখনই বিভাজিত হয় না - স্নায়ুকোষ।
  • ক্ষতস্থানে নতুন কোষ সৃষ্টির মাধ্যমে জীবদেহের ক্ষতস্থান পূরণ করতে অপরিহার্য মাইটোসিস।
  • মাইটোসিস বিভাজনের ৫টি ধাপ- প্রোফেজ, প্রো-মেটাফেজ, মেটাফেজ, অ্যানাফেজ ও টেলোফেজ।

মাইটোসিস কোথায় হয় : মাইটোসিস বিভাজন প্রকৃত নিউক্লিয়াসযুক্ত জীবের দেহকোষে ঘটে। উদ্ভিদের বর্ধনশীল অংশের ভাজক টিস্যু যেমন- কাণ্ড, মূলের অগ্রভাগ, ভ্রুণমুকুল ও ভ্রূণমূল, বর্ধনশীল পাতা, মুকুল ইত্যাদিতে এ রকম বিভাজন দেখা যায়। প্রাণিদেহের দেহকোষে, ভ্রুণের পরিবর্ধনের সময়, নিম্নশ্রেণির প্রাণীর ও উদ্ভিদের অযৌন জননের সময় এ ধরনের বিভাজন হয়। প্রাণীর স্নায়ুটিস্যুর স্নায়ুকোষে, স্তন্যপায়ী প্রাণীর পরিণত লোহিত রক্ত কণিকা ও অনুচক্রিকা এবং উদ্ভিদের স্থায়ী টিস্যুর কোষে এ ধরনের বিভাজন ঘটে না।

মাইটোসিস কোষ বিভাজন পদ্ধতি

মাইটোসিস বিভাজনটি দুটি পর্যায়ে সম্পন্ন হয়। প্রথম পর্যায়ে নিউক্লিয়াসের এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে সাইটোপ্লাজমের বিভাজন হয়। নিউক্লিয়াসের বিভাজনকে ক্যারিওকাইনেসিস এবং সাইটোপ্লাজমের বিভাজনকে সাইটোকাইনেসিস বলে। মাইটোসিস কোষ বিভাজন একটি ধারাবাহিক পদ্ধতি। প্রথমে ক্যারিওকাইনেসিস অর্থ্যাৎ নিউক্লিয়াসের বিভাজন হয়, পরবর্তীতে সাইটোকাইনেসিস অর্থাৎ সাইটোপ্লাজমের বিভাজন হয়। তবে ক্যারিওকাইনেসিস ও সাইটোকাইনেসিস শুরু হওয়ার আগে কোষটির নিউক্লিয়াসকে কিছু প্রস্তুতিমূলক কাজ করতে হয়। কোষটির এ অবস্থাকে ইন্টারফেজ বলে।

ক্যারিওকাইনেসিস

বিভাজিত কোষে নিউক্লিয়াসটির একটি জটিল পরিবর্তনের মাধ্যমে ক্যারিওকাইনেসিস সম্পন্ন হয়। পরিবর্তনগুলো ধারাবাহিকভাবে ঘটে। বোঝার সুবিধার্থে এই পর্যায়টিকে পাঁচটি ধাপে বিভক্ত করা হয়েছে। ধাপগুলো- ১. প্রোফেজ, ২. প্রো-মেটাফেজ, ৩. মেটাফেজ, ৪. অ্যানাফেজ ও ৫. টেলোফেজ।

প্রোফেজ : এটি মাইটোসিস কোষ বিভাজনের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী ধাপ। এ ধাপে কোষে নিম্নলিখিত ঘটনাবলি ঘটে-

  1. কোষের নিউক্লিয়াস আকারে বড় হয়।
  2. পানি বিয়োজনের ফলে নিউক্লিয়ার জালিকা ভেঙ্গে গিয়ে কতগুলো নির্দিষ্ট সংখ্যক আঁকাবাঁকা সুতার মতো অংশের সৃষ্টি হয়। এগুলোকে ক্রোমোজোম বলে। এরপর প্রতিটি ক্রোমোজোম লম্বালম্বিভাবে বিভক্ত হয়ে দুটি ক্রোমাটিড গঠন করে। এগুলো সেন্ট্রোমিয়ার নামক একটি বিন্দুতে যুক্ত থাকে।

প্রো-মেটাফেজ: এ ধাপটি স্বল্পস্থায়ী। এ ধাপে-

  1. নিউক্লিয়ার পর্দা ও নিউক্লিওলাস প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যায়।
  2. কোষের উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু পর্যন্ত বিস্তৃত কতগুলো তন্তুর আবির্ভাব ঘটে। এগুলো মাকুর আকৃতি ধারণ করে তাই একে স্পিন্ডল যন্ত্র বলে। স্পিন্ডল যন্ত্রের মধ্যভাগকে বিষুবীয় অঞ্চল বলে। প্রাণিকোষে সেন্ট্রিওল দুটির চারদিক থেকে বিচ্ছুরিত রশ্মির মতো অ্যাস্টার রশ্মির আবির্ভাব ঘটে এবং কোষের দুই বিপরীত মেরুতে পৌঁছাতে স্পিন্ডল তন্তু গঠন করে। তন্তুগুলো পরস্পর যুক্ত হয়ে স্পিন্ডল যন্ত্র গঠন করে।

মেটাফেজ - এ ধাপে

  1. ক্রোমোজোমগুলো স্পিন্ডল যন্ত্রের বিষুবীয় অঞ্চলে আসে এবং সেন্ট্রোমিয়ারের সাথে তন্তু দিয়ে আটকে থাকে।
  2. এ ধাপে ক্রোমোজোমগুলো সবচেয়ে খাটো ও মোটা দেখায়।

অ্যানাফেজ - এ ধাপে

  1. প্রতিটি ক্রোমোজোমের সেন্ট্রোমিয়ার দুভাগে বিভক্ত হয়ে যায়, ফলে প্রত্যেক ক্রোমাটিডে একটি করে সেন্ট্রোমিয়ার থাকে।
  2. ক্রোমাটিডগুলো পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ অবস্থায় প্রতিটি ক্রোমাটিভকে অপত্য ক্রোমোজোম বলে।
  3. এরপর ক্রোমোজোমগুলোর সাথে যুক্ত তন্তুগুলোর সংকোচনের ফলে অপত্য ক্রোমোজোমের অর্ধেক উত্তর মেরুর দিকে এবং অর্ধেক দক্ষিণ মেরুর দিকে অগ্রসর হতে থাকে। এ সময় ক্রোমোজোমগুলো ইংরেজি বর্ণমালার V. L. J অথবা I আকৃতি বিশিষ্ট হয় ।

টেলোফেজ - এ ধাপে

  1. অপত্য ক্রোমোজোমগুলো বিপরীত মেরুতে এসে পৌঁছায়।
  2. এরপর উভয় মেরুর ক্রোমোজোমগুলোকে ঘিরে নিউক্লিয়ার পর্দা এবং নিউক্লিওলাসের পুনঃ আবির্ভাব ঘটে। প্রাণিকোষে উভয় মেরুতে একটি করে সেন্ট্রিওল সৃষ্টি হয়।
  3. এ অবস্থায় ক্রোমোজোমগুলো সরু ও লম্বা আকার ধারণ করে পরস্পরের সাথে জট পাকিয়ে নিউক্লিয়ার রেটিকুলাম গঠন করে। এভাবে কোষের দুই মেরুতে দুটি অপত্য নিউক্লিয়াস গঠিত হয় এবং ক্যারিওকাইনেসিসের সমাপ্তি ঘটে।

সাইটোকাইনেসিস

নিউক্লিয়াসের বিভাজন শেষ হওয়ার সাথে সাথে সাইটোকাইনেসিস শুরু হয়। প্রকৃতপক্ষে টেলোফেজ দশাতেই সাইটোকাইনেসিস শুরু হয়। টেলোফেজ ধাপের শেষে বিষুবীয় তলে এন্ডোপ্লাজমিক জালিকার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশগুলো জমা হয় এবং পরে এরা মিলিত হয়ে কোষপ্লেট গঠন করে। কোষপ্লেট পরিবর্তিত ও পরিবর্ধিত হয়ে কোষপ্রাচীর গঠন করে। ফলে একটি মাতৃকোষ থেকে দুটি অপত্য কোষ সৃষ্টি হয়। প্রাণিকোষের ক্ষেত্রে নিউক্লিয়াসের বিভাজনের সাথে সাথে কোষের মাঝামাঝি অংশে কোষপর্দার উভয় পাশ থেকে দুটি খাঁজ সৃষ্টি হয়। কোষপর্দার এ খাঁজ ক্রমশ ভিতরের দিকে গিয়ে নিরক্ষীয় তল বরাবরে বিস্তৃত হয় এবং মিলিত হয়ে দুটি অপত্য কোষ সৃষ্টি করে। তাহলে আমরা জানতে পারলাম উদ্ভিদ কোষের কোষপ্লেট গঠিত হয় এবং প্রাণিকোষে ক্লিভেজ বা ফারোয়িং পদ্ধতিতে সাইটোকাইনেসিস ঘটে।

মিয়োসিস

মিয়োসিস : জনন কোষ উৎপন্নের সময় মিয়োসিস কোষ বিভাজন ঘটে। এ ধরনের কোষ বিভাজনে মাতৃকোষের নিউক্লিয়াসটি পরপর দুবার বিভাজিত হলেও ক্রোমোজোমের বিভাজন ঘটে মাত্র একবার। ফলে অপত্য কোষে ক্রোমোজোমের সংখ্যা অর্ধেক হয়ে যায়। এ বিভাজনে ক্রোমোজোমের সংখ্যা অর্ধেক হ্রাস পায় বলে এ ধরনের বিভাজনকে হ্রাসমূলক বিভাজনও বলা হয়। জনন মাতৃকোষ থেকে পুং ও স্ত্রী গ্যামেট উৎপন্নের সময় এ ধরনের কোষ বিভাজন হয়।

মাইটোসিস কোষ বিভাজনে অপত্য কোষগুলোর ক্রোমোজোম সংখ্যা মাতৃকোষের সমান থাকে। বৃদ্ধি ও অযৌন জননের জন্য মাইটোসিস কোষ বিভাজন অপরিহার্য। যৌন জননে পুং ও স্ত্রী জনন কোষের মিলনের প্রয়োজন পড়ে। যদি জননকোষগুলোর ক্রোমোজোম সংখ্যা দেহকোষের সমান থেকে যায় তাহলে জাইগোট কোষে জীবটির ক্রোমোজোম দেহকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যার দ্বিগুণ হয়ে যাবে। মিয়োসিস কোষ বিভাজনে জননকোষে ক্রোমোজোম সংখ্যা মাতৃকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যার অর্ধেক হয়ে যায়। ফলে দুটি জননকোষ একত্রিত হয়ে যে জাইগোট গঠন করে তার ক্রোমোজোম সংখ্যা প্রজাতির ক্রোমোজোম সংখ্যার অনুরূপ থাকে। এতে নির্দিষ্ট প্রজাতির ক্রোমোজোম সংখ্যার ধ্রুবতা বজায় থাকে। জননকোষ সৃষ্টির সময় এবং নিম্নশ্রেণির উদ্ভিদের জীবন চক্রের কোনো এক সময় যখন এরকম ঘটে তখন কোষের ক্রোমোজোম সংখ্যার সে অবস্থাকে হ্যাপ্লয়েড (n) বলে। যখন দুটি হ্যাপ্লয়েড কোষের মিলন ঘটে তখন সে অবস্থাকে ডিপ্লয়েড (2n) বলে । সুতরাং মিয়োসিস কোষ বিভাজন হয় বলেই প্রতিটি প্রজাতির বৈশিষ্ট্য বংশপরম্পরায় টিকে থাকতে পারে।
মিয়োসিসের বৈশিষ্ট্য :

  1. ডিপ্লয়েড জীবের জনন মাতৃকোষ ও হ্যাপ্লয়েড জীবের জাইগোটে মিয়োসিস ঘটে।
  2. এ ধরনের কোষ বিভাজনে একটি কোষ থেকে চারটি কোষের সৃষ্টি হয়।
  3. ক্রোমোজোম একবার বিভক্ত হয় এবং নিউক্লিয়াস দুবার বিভক্ত হয়।
  4. সৃষ্ট চারটি কোষের নিউক্লিয়াসে ক্রোমোজোম সংখ্যা মাতৃ নিউক্লিয়াসের ক্রোমোজোম সংখ্যার অর্ধেক হয়।

মিয়োসিস কোথার ঘটে

মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রধানত জীবের জনন কোষ বা গ্যামেট সৃষ্টির সময় জনন মাতৃকোষে ঘটে। সপুষ্পক উদ্ভিদের পরাগধানী ও ডিম্বকের মধ্যে এবং উন্নত প্রাণিদেহে শুক্রাশয় ও ডিম্বাশয় এর মধ্যে মিয়োসিস ঘটে।

মিয়োসিস কোষ বিভাজন

মিয়োসিস কোষ বিভাজনের সময় একটি জনন মাতৃকোষ পরপর দুই ধাপে বিভাজিত হয়। প্রথম বিভাজনকে মিয়োসিস-১ এবং দ্বিতীয় বিভাজনকে মিয়োসিস-২ বলা হয়। প্রথম বিভাজনের সময় সৃষ্ট দুইটি অপত্য কোষের ক্রোমোজোম সংখ্যা মাতৃকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যার অর্ধেক হয়। দ্বিতীয় বিভাজনটি মাইটোসিস বিভাজনের অনুরূপ। অর্থাৎ প্রথম বিভাজনে উৎপন্ন প্রতিটি কোষ পুনরায় বিভাজিত হয়ে দুইটি অপত্য কোষের সৃষ্টি করে। এক্ষেত্রে অপত্য কোষের ক্রোমোজোম সংখ্যা মাতৃকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যার সমান হয়। ফলে একটি জনন মাতৃকোষ (2n) থেকে চারটি অপত্যকোষ (n) সৃষ্টি হয়।

  • নিষেক : পুরুষ ও স্ত্রী জননকোষ একীভবনের পর এগুলোর নিউক্লিয়াসের পরস্পর মিলনকে নিষেক বলে।
  • জাইগোট : নিষেকের ফলে উৎপন্ন কোষকে গ্যামেট বলে।
  • ইমপ্লানটেশন : জরায়ুর এন্ডোমেট্রিয়ামে ব্লাস্টোসিষ্ট প্রথিত হওয়াকে ইমপ্লানটেশন বলে।
  • ক্যান্সার: শরীরে কোনো স্থানে কোষের দ্রুত, অস্বাভাবিক ও অনিয়ন্ত্রিত বিভাজন হলে তাকে ক্যান্সার বলে।
Shopping Cart
error: Content is protected !!
Scroll to Top